কোভিড-১৯ চিকিৎসায় ‘রেমডিসিভির’ ব্যবহারের সুপারিশ করেছে ভারত

কোভিড-১৯ চিকিৎসায় ‘রেমডিসিভির’ ব্যবহারের সুপারিশ করেছে ভারত

॥ আমিনুল ইসলাম মির্জা ॥

অনলাইন ডেক্স : ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় মাঝারি পর্যায়ের কোভিড-১৯ রোগীদের চিকিৎসায় জরুরি ব্যবহারের জন্য এন্টি-ভাইরাল ড্রাগ ‘রেমডিসিভির’ ব্যবহারের সুপারিশ করেছে। মহামারীর কারণে চতুর্থ ক্ষতিগ্রস্ত দেশ হিসেবে ভারতে বর্তমানে করোনা রোগীর সংখ্যা ৩ লাখ ২০ হাজার।

শনিবার প্রকাশিত ‘কোভিড-১৯ এর ক্লিনিক্যাল ম্যানেজমেন্ট প্রোটোকল’ এ মন্ত্রণালয় বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কোন কার্যকর প্রভাব পেতে এই ওষুধটি যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ব্যবহার করা এবং আক্রান্ত গুরুতর রোগী এড়িয়ে চলা উচিৎ।

মহারাষ্ট্র সরকার বাংলাদেশ থেকে ১৩ হাজার রেমডিসিভির কেনার পরিকল্পনা করছে। তারা কোভিড-১৯ রোগীদের চিকিৎসায় এই ওষুধের ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে যাবে।

রাজ্যের কোভিড-১৯ টাস্ক ফোর্সের সমন্বয়ে গঠিত ডাক্তাররা ক্লিনিক্যাল ম্যানেজমেন্টের উপর নজর রাখেন এবং মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকুরের কাছে রিপোর্ট করে জীবন রক্ষায় এর ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছেন।

শুক্রবার দ্যা হিন্দুস্তান টাইমস জানিয়েছে, ১৮টি মেডিকেল কলেজে এই ওষুধ সরবরাহ করা হবে। ভারতীয় কোম্পানিগুলো এটি তৈরি করেনি বলে সরকার একটি বাংলাদেশী কোম্পানি থেকে সংগ্রহ করছে।

প্রতিবেদনে বলা হয় মহারাষ্ট্র প্রাথমিকভাবে ৩ হাজার রেমডিসিভির পাচ্ছে এবং আরও ১০ হাজার সংগ্রহের পরিকল্পনা চূড়ান্ত করা হয়েছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (হু) মতে, এই ওষুধ কোভিড-১৯ এর বিরুদ্ধে আমাদের সাফল্য দিতে পারে। এই ব্যয়বহুল ওষুধটি দরিদ্র এবং অভাবী রোগীদের জন্য সরবরাহ করা হচ্ছে বলে মহারাষ্ট্রের স্বাস্থ্যমন্ত্রী রাজেশ টোপ টুইট বার্তায় জানান।

মোট ১ লাখ ৪ হাজার ৫৬৮ করোনাভাইরাস রোগী নিয়ে মহারাষ্ট্র ভারতের সবচেয়ে বেশি করোনা ক্ষতিগ্রস্থ রাজ্য। এ রাজ্যে মোট মৃতের সংখ্যা ৩ হাজার ৮৩০ জনে পৌঁছেছে।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী গত ২৪ ঘন্টায় ভারত সর্বোচ্চ ১১ হাজার ৯২৯ জন আক্রান্ত হয়েছে এবং এক দিনে ৩১১ জনের মৃত্যুতে মোট মৃতের সংখ্যা দাড়িয়েছে ৯ হাজার ১৯৫ জনে।

সারা ভারতে কোভিড-১৯ আক্রান্ত বৃদ্ধির অব্যাহত থাকায় রোগ সংক্রমণের বিস্তার কিভাবে কমানো যায় তা নিয়ে আলোচনার জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ১৬ বা ১৭ জুলাই বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে একটি ভার্চুয়াল বৈঠক করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। সূত্র বলছে প্রধানমন্ত্রী এ ব্যাপারে লকডাউন নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে আলোচনা করতে পারেন বলে ধারনা করা হচ্ছে।

অপরদিকে আক্রান্তের সংখ্যা ব্যাপক বৃদ্ধি পাওয়ায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ আজ দিল্লির কোভিড-১৯ পরিস্থিতি নিয়ে একটি বৈঠক করেছেন।

মহারাষ্ট্র ও তামিলনাড়–র পর দেশের তৃতীয় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত রাজ্য দিল্লি। এখানে এ পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ৩৮ হাজার ৯ শ’ ৫৯। আজ আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ২ হাজার ১ শ’ ৩৪ জন।

আজ এনডিটিভি জানায়, স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ বর্ধন, দিল্লির লেফটেন্যান্ট গভর্নর অনিল বাইজাল, মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল একটি বৈঠক করেন, এতে স্টেট ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অথরিটির (এসডিএমএ) কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠক শেষে অমিত শাহ টুইট বার্তায় বলেন, কেন্দ্র তাদের হাসপাতালের শয্যা হিসেবে উন্নীত করার জন্য দিল্লি সরকারের কাছে ৫০০ রেল কোচ পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর মাধ্যমে কোভিড-১৯ সংক্রমণ মোকাবেলায় প্রয়োজনীয় সবকিছু দিয়ে সজ্জিত ৮ হাজার অতিরিক্ত শয্যা প্রদান করা হবে। বৈঠকে আগামী ছয় দিনে দিল্লিতে কোভিড-১৯ পরীক্ষা তিনগুণ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। বাসস

সর্বশেষ সংবাদ